[collected]
বাংলাদেশেই তৈরি হয় বিশ্বের সবচেয়ে দামি আতর। এমন শুষ্ক কাঠ থেকে কিভাবে তৈরি হয় লাখ টাকা দামের আতর! মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সুজানগর গ্রাম, এই গ্রামের প্রায় সব মানুষ আগর-আতর শিল্পের সাথে জড়িত। বাড়ির আঙ্গিনা থেকে শুরু করে সব জায়গায় সারি সারি আগর গাছ।
আতরের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত আগর গাছের কাণ্ড, ডালপালা কিংবা পাতা সরাসরি সুগন্ধি নয়, সুগন্ধি মূলত এর পচা অংশ। আগর গাছের বয়স ৬-৭ বছর হলেই পুরো গাছে এক ইঞ্চি পরপর মারা হয় পেরেক। তখন গাছ থেকে একধরনের কস বের হয়ে পেরেকের চারপাশে জমা হয়। সেই কসে ছত্রাক আক্রান্ত হয়ে ধারণ করে কালো রঙ।
এভাবে ৫-৭ বছর রাখার পর গাছ কেটে ছোট ছোট ফালি করা হয়, আর খোলা হয় কাণ্ডের পেরেক। কাঠের সাদা ও কালো অংশ ছোট ছোট করে কেটে আলাদা করা হয়। কালো অংশ দিয়ে তৈরি হয় উৎকৃষ্ট মানের আতর আর সাদা অংশ দিয়ে তৈরি হয় সাধারণ মানের আতর।
আগর কাঠের পাতলা অংশ এক থেকে দেড় মাস পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর একধরণের বিশেষ চুল্লিতে সিদ্ধ করা হয়। আগর কাঠের পাতলা অংশ বিশেষ চুল্লিতে একাধারে প্রায় ১০ দিন সেদ্ধ করার পর আস্তে আস্তে বাষ্প হয়ে একটি নির্দিষ্ট পাত্রে জমা হয়। এই বাষ্পকে ঠাণ্ডা পানির সংস্পর্শে এনে সহজেই ফোটায় ফোটায় তরলে পরিণত করা হয়।এই তরলের উপর তেলের আস্তরণ পরে।তেলের এই আস্তরণই আমাদের কাঙ্ক্ষিত আতর। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে প্রাপ্ত আতর গুণে ও মানে হয় অতুলনীয়।
তেলের এই আস্তরণই আমাদের কাঙ্ক্ষিত আতর। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে প্রাপ্ত আতর গুণে ও মানে হয় অতুলনীয়।
পৃথিবীতে গোলাপসহ বিভিন্ন সুগন্ধি ফুল দিয়ে আতর তৈরি করা হলেও আগর আতর উৎকৃষ্ট ও অতি মূল্যবান। তাই এ আতরকে বলা হয় সর্বোত্তম। লিটার প্রতি এই আতরের মূল্য ৪-১২ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয় এই আতর।
এছাড়াও সুগন্ধি কাঠ হিসেবে বিদেশে রপ্তানি করা হয় আগর কাঠ। প্রতি কেজি সুগন্ধি আগর কাঠ প্রায় ২ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়।
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের মানুষেরা আগর কাট জ্বালিয়ে সুগন্ধি ধোঁয়া উৎপাদন করে থাকে। বলা হয়, জান্নাতবাসীরা বেহেস্তে যে সুগন্ধি কাঠ প্রজ্জ্বলন করবে তা এই আগর কাঠ। তাই সমস্ত মুসলিম বিশ্বে এই আগর আতরের রয়েছে বিশেষ কদর।